
এইচ.কে রফিক উদ্দিনঃ
কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ রোহিঙ্গা অর্ধ্যুষিত এলাকায় মা ও শিশুদের পুষ্টিহীনতা রোধে হোস্ট কমিউনিটিতে সচেতনতা বাড়াতে ইউএসএআইডি’র (USAID) আর্থিক সহযোগিতায় ওয়ার্ল্ড ভিশন ‘জরুরী খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসুচি’র বাস্তবায়নে পুষ্টি সচেতনতায় কাজ করে যাচ্ছেন ১৫০ প্রসূতির পাশাপাশি এক হাজার ৯০০ নারী। তারা পুষ্টিসমৃদ্ধ নানা জাতের শস্য উৎপাদনের পাশাপাশি বাড়ির পরিত্যক্ত জমিতে চাষও করছেন নিজেরা। সেসব টাটকা সবজি খেয়ে শিশু ও নিজেদের পুষ্টিহীনতা দূর করছেন।
উখিয়ার ৫নং পালংখালী ইউনিয়নের ১৩ ও ১৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাশের গ্রাম তাজনিমার খোলা। সেই গ্রামের লিড মাদার শাহিনা (২৭) বলেন, পাহাড়ের আশপাশের জমিতে অন্যদের মতো আমরাও নিয়মিত চাষাবাদ করতাম। কিন্তু ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের স্থান দিতে গিয়ে চাষের জমিগুলো রোহিঙ্গাদের দখলে চলে যায়। চাল-ডাল-লাউ-কুমড়া-লাল শাক-পুঁইশাক-কলা-বেগুন-আলু ও টমেটোসহ অন্য সবজি আগেও আমরা নিয়মিত খেয়েছি। কিন্তু বাচ্চাদের পুষ্টিহীনতা লেগেই থাকতো। ২০১৯ সালে সেবা সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন এলাকায় এসে পুষ্টি নিয়ে কথা বলে। বাচ্চাদের পুষ্টিহীনতা দূর করতে খিচুড়ি খাওয়ানোর পরামর্শ দেয়।
পুষ্টি সচেতনতা কার্যক্রম এবং সবজি বীজ বিতরণ ও পুষ্টি খিচুড়ি রান্না বিষয়ক কার্যক্রম দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় সবজি খাওয়ার উপকারিতা, স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে সবজি খিচুড়ি রান্নার কৌশল প্রদর্শন করা হয়, কোন সবজিতে কি কি ভিটামিন এবং কিভাবে সবজি রান্না করলে পুষ্টিগুন ভালো থাকে সে বিষয়ে ধারণা লাভ করি।তাদের দেখানো কৌশলে খিচুড়ি তৈরি করে বাচ্চাকে খাওয়ানোর পর বাচ্চার স্বাস্থ্য দিনদিন ফিরেছে।
তসলিমা (২৩) নামে আরেক নারী বলেন, ‘খিদা মেটাতে খাবার খেলেও দারিদ্রতার কারণে পুষ্টি কার্যক্রম সম্পর্কে আগে ধারনা ছিলো না। শাক-সবজি ছাড়াও মাছ-মাংসের যোগান নিশ্চিত করতে ওয়ার্ল্ড ভিশন এনজিওর অনুদানে মুরগির মিনি খামার ও পুকুরে মাছ ফেলেছিলাম। সেখান থেকেই এখন নিয়মিত আমিষের জোগান হচ্ছে।
উল্লেখ্য,কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প অধ্যুষিত রাজাপালং, জালিয়াপালং ও পালংখালী এবং টেকনাফের হ্নীলা ও বাহারছরা ইউনিয়নের দু’হাজারের অধিক নারী পুষ্টিহীনতা রোধের পাশাপাশি সংসারে সচ্ছলতাও আনছেন। এসব বিষয়ে সন্তানদেরও সচেতন করে তুলছেন তারা।
পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন,আমার নির্বাচনী এলাকা ৪ নম্বর ওয়ার্ড তাজনিমার খোলায় অধিকাংশ পরিবার খেটে খাওয়া।ওয়ার্ল্ড ভিশন এনজিওর পুষ্টি সচেতনতায় সম্পৃক্ত হয়ে নিজেদের খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টির জোগানে এরা সফলতা এনেছে।
পাঠকের মতামত